ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধিঃ রামগঞ্জ উপজেলায় মন্ত্রনালয় ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রাক্তন সভাপতি ও বর্তমান অভিভাবক সদস্যকে হয়রানি করার হুমকি প্রদান করা হয়।
রামগঞ্জ উপজেলায় ৩নং ভাদুর ইউনিয়ন মধ্য ভাদুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি ও অভিভাবক সদস্যকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মধ্য ভাদুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতির ছেলে এমরান হোসেন ভূঁইয়া জানান, আমার মা ১৭ দিন আইসিইউতে ও ২৬ দিন হাঁসপাতালে ভর্তি ছিল গত ১৪ জুন ২০২৪ইং সকাল ৮.০০ঘটিকায় আমার ছোট ভাইয়ের সাথে গাড়িযোগে বাড়ীতে আসেন রাস্তা ভাঙার কারনে রাস্তার পাশে গাড়িটি গর্তে পড়ে যায় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গাড়ি উঠানো হয়। তারই প্রেক্ষিতে ১৫ জুন ২০২৪ইং তারিখে এলাকার কিছু সাধারণ মানুষ তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্কুলের পুরাতন ভবন ক্রয়কারী ঠিকাদারের অনুমতিক্রমে স্কুল ভেঙে নেওয়ার পরবর্তীতে থাকা সুরকি ও বালু মাটি দিয়ে দাতা সদস্যদের যাতায়াতের রাস্তাটি মেরামত করা হয়। রাস্তাটি মেরামতের শেষ পর্যায় আনুমানিক ৩.৩০ ঘটিকার সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ৩নং ভাদুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল জরিমানা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয় উক্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিভাবক সদস্য ফাতেমা বেগম সার্বিক বিষয়টি অবগত করেন ও একপর্যায় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি ও অভিভাবক সদস্যকে মহিলা পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে যাবে বলে হুমকি প্রদান করেন।
দাতা সদস্য এমরান হোসেন ভূঁইয়া আরো জানান আমরা আইনের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল আমদের বাড়ির ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। স্কুল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দাতা সদস্যদের পক্ষথেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়, শিক্ষা অফিসারকে অবগত করে ০৩ (তিন) টি আবেদনপত্র দেওয়া হয় অত্যান্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় দাখিলকৃত আবেদনপত্র গুলোর কোন প্রকার প্রতিকাকার না পেয়ে পরবর্তী পর্যায় দাতা সদস্যদের অধিকার ও স্কুল আওতাধীন অতিরিক্ত জায়গা প্রাপ্য বুঝে নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন পত্র দাখিল ও রামগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্মারক নং ৩৮.০০.০০০০.০১২.১৪.০০২.২০.৮১, ০৭ মে ২০২৪খ্রিঃ দাতা সদস্যদের যাতায়াতের রাস্তা ও মালিকানাধীন জায়গা বাদ দিয়ে বিদ্যালয়ের দানকৃৎ জায়গায় নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। আদালত কর্তৃক বিবাদীদেরকে ২০ দিনের শোকজ করেন। গত ২৭ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক মামলার বাদী ও দাতা সদস্যদেরকে ডেকে পাঠান। তারই প্রেক্ষিতে ৩০ মে ২০২৪খ্রিঃ দাতা সদস্য গং ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় যাই। এমতাবস্থায় গত ৩০মে উপজেলা শিক্ষা অফিসার সরজমিন তদন্ত পূর্বক স্কুলে এসে বিষয়টি দেখে যান। গত ২৭ মে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক দাতা সদস্যদেরকে ডেকে পাঠান। তারই প্রেক্ষিতে ৩০মে ২০২৪খ্রিঃ সময়ঃ ০৩.০০ থেকে ০৪.০০ঘটিকায় দাতা সদস্য গং ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় যায়। দাতা সদস্যগণ ও স্কুল ব্যবস্থাপনার কমিটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাগজপত্র উপস্থাপন পূর্বক কথা বলার চেষ্টা করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় কাগজপত্র ছাড়া বিষয়টি শুনার এক পর্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় অসংযত আচরণে হতবাক।
সরজমিনে দেখা যায় দাতা সদস্যদের যাতায়াতের পিচ ঢালাই রাস্তা ১২ ফুট ছিল, যাহা পুরাতন ভবনের ছবি ও বর্তমান রাস্তা দেখে বুঝা যায়। স্কুল ভূমির পূর্ব ও দক্ষিণ পাশের জায়গাটি দাতা সদস্যদের আওতাধীন ছিল। ইউপি সদস্য কর্তৃক দাতা সদস্যদের ব্যক্তিগত জায়গা দখল করে ভাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেন, দাতা সদস্যগণ স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভাউন্ডারি ওয়ালটি তাদের নয় বলে স্বীকার করেন। বর্তমানে এলাকার বিশৃঙ্খলাকারী কিছু ব্যক্তিবিশেষ যোরপূর্বক ভাবে দাতা সদস্যদের ব্যক্তিগত জায়গায় নির্মিত ভাউন্ডারি ওয়ালটি স্কুলের ভাউন্ডারি ওয়াল বলে চালিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ জসীম (৩৪) বলে বিষয়টি দিনে দিনে কঠিন হচ্ছে, বিষয়টি একবারে সহজ দাতা সদস্যদের জায়গা স্কুল কর্তৃপক্ষ বুঝে নিয়ে স্কুলের জায়গায় স্কুল নির্মাণ করলে এত জটিলতা সৃষ্টি হতোনা। মোরসেদ (৩২) বলেন এলাকা উন্নয়নে যাদের কোন প্রকার অবদান নেই আজকে তারাই সমাজে বিশৃঙ্খলা করে স্কুল নির্মাণে প্রতিবন্দকতা সৃষ্টি করতেছে। কামাল হোসেন (৪৪) বলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাধ্যমে স্কুল ভূমির সীমানা নির্ধারণ করে দিলেই বিষয়টি সমাধান হয়ে যেত। তানাকরে প্রশাসন উল্টা দাতা সদস্যদের যাতায়াতের রাস্তা ও ব্যক্তিগত জায়গায় স্কুল নির্মাণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। দাতা সদস্য হারুনুর রসীদ (৫৮) বলেন আমরা স্কুলকে জায়গা দিয়েছি অত্র এলাকাকে আলোকিত করার জন্য, আমাদের যাতায়াতের রাস্তা ও ব্যক্তিগত জায়গায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য নয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ দাতা সদস্যদের দানকৃত জায়গা বুঝে নিয়ে স্কুল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করুক। আরেক দাতা সদস্য ফারুক আলম ভূঁইয়া (৪৯) বলেন ১৯৭৩ স্কুলঘরটি স্কুল ভূমির উত্তর পাশে ছিল কালের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় পর্যায় স্কুল ভূমির দক্ষিণ পাশে ছিল, তৃতীয় পর্যায় স্কুল ভূমির পূর্বে পাশে আধাপাকা ভবন নির্মাণ করা হয়, ততসময় এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল আধাপাকা ভবনটি স্কুল ভূমির পশ্চিম পাশে করার জন্য। চতুর্থ পর্যায় স্কুল ভূমির দক্ষিণ পাশে স্কুলের স্থায়ী ভবন নির্মাণ করা হয়। পঞ্চম পর্যায় এসে এখন এলাকাবাসী চাচ্ছে স্কুলের স্থায়ী ভবনটি স্কুলের পশ্চিম পাশে করার জন্য। এলাকাবাসী ও দাতা সদস্যগণ চাচ্ছে স্কুলের স্থায়ী ভবনটি স্কুলের পশ্চিম পাশে নির্মাণ করে স্কুলের মাঠ রক্ষা করে স্কুল পড়ুয়া বাচ্চাদের শরীর চর্চা করার ও এলাকাকে আলোকিত রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।