বরগুনা জেলার পাথরঘাটার স্কুল শিক্ষক তরিকুল ইসলাম মরুভূমির ফল ‘সাম্মাম’ চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফলের জন্য নির্দিষ্ট মৌসুম ছাড়াও অসময়ের সাম্মাম উৎপাদনেরও সফলতা পেয়েছেন।
সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের ফল সাম্মাম । এরই মধ্যে সাম্মাম এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তরিকুলের জমিতে দুই মৌসুমে চাষ করা দুই জাতের সাম্মাম রয়েছে। এর মধ্যে এক জাতের সাম্মামের বাইরের অংশ দেখতে ক্ষীরার মতো খসখসে আর ভেতরে পেঁপের রং। আরেক জাত হচ্ছে বাইরে সবুজ ভেতরে সাদা। দুটি ফলই খেতে মিষ্টি, রসালো ও সুস্বাদু। সাম্মাম ফলের ভেতরটা দেখতে ও খেতে বাঙ্গির মতো।
পাথরঘাটা উপজেলা চরদুয়ানী ইউনিয়নের ছোট টেংরা গ্রামের তরিকুল ইসলাম স্থানীয় তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমির ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক। সাম্মাম চাষের বিষয়ে তিনি জানান, প্রথমে আমি ধান, তরমুজ ও বিভিন্ন রবিশস্য চাষ করতাম। পরে অনলাইনে সাম্মাম চাষ দেখে চার বছর আগে রংপুর থেকে বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে অল্প জায়গায় চাষ করেছি। প্রথম চাষ করার পর অনেকেই বলেছিলেন, সাম্মাম এ এলাকায় ভালো হবে না। পরের বছর থেকে মৌসুম ছাড়া অসময়েই সাম্মাম চাষ করে লাভের মুখ দেখেছি। এখন মাছের ঘেরের চারপাশে পরিত্যক্ত জমিতে ৫০০ বীজ রোপণ করেছি। মূলতঃ সাম্মাম চাষ হয় মরুভূমিতে। সাম্মাম চাষের মৌসুম হলো ফেব্রুারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। আর আমি চাষ করেছি মে থেকে জুলাইয়ে। অসমযয়েও ভালো ফলন হয়েওছে। এ অ-মৌসুমেও ৫০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করেছি।
তরিকুল আরও জানান, সাম্মাম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৩০ টাকায়। একেকটির ওজন আধা কেজি থেকে দুই কেজি পর্যন্ত হচ্ছে। এ ফল খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছি। এ বছর সাম্মাম থেকেই আয়ের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ টাকা।
পাথরঘাটার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত হোসেন জানিয়েছেন, সাম্মাম মরুভূমি ও পাহাড়ের ফল। উপকূলীয় অঞ্চলে এটি নতুন। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা বুঝতে পারছি, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততায়ও চাষ করা যায় এবং ভালো ফলনও হয়। অল্প জমিতেই সাম্মাম চাষ করা যায়, খরচ কম তবে বেশি যত্ন নিতে হয়। যেহেতু এ অঞ্চলে এ ফল নতুন, তাই এ ফলের স্বাদ বা উপকারিতা এবং বাজারজাত নিয়ে প্রচার-প্রচারণা দরকার।