মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২১, ২০২৫
- বিজ্ঞাপন -
হোম জাতীয় নতুন বছরে সবার জীবনে অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী

নতুন বছরে সবার জীবনে অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী

গ্রামীণ কৃষি ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টিয় নতুন বছর ২০২১ উপলক্ষে দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আগামীকাল খ্রিষ্টিয় নতুন বছর ২০২১। এ উপলক্ষে তিনি আজ এক বাণীতে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আরো বলেন, “প্রকৃতির নিয়মেই যেমন নতুনের আগমনী বার্তা আমাদের উদ্বেলিত করে, তেমনি অতীত-ভবিষ্যতের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে পুরনো স্মৃতি-সম্ভারে হারিয়ে যাওয়ার চিরায়ত স্বভাব কখনও আনন্দ দেয়, আর কখনোবা কৃতকর্মের শিক্ষা নব-উদ্যোমে সুন্দর আগামীর পথচলার জন্য অনুপ্রেরণা যোগায়। ”
আওয়ামী লীগ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে ধর্মীয় উগ্রবাদসহ যে কোন সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রতিজ্ঞাবন্ধ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বির্নিমাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করারও আহবান জানান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আসুন আমরা নতুন বছরে প্রতিজ্ঞা করি, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রেখে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বির্নিমাণে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করব। নতুন বছর ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ ভুলে মানুষে-মানুষে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন জোরদার করুক, সকল সংকট মোকাবিলার শক্তি দান করুক এবং সকলের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই প্রার্থনা করি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ বাঙালি জাতির জীবনে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কেননা, ১০০ বছর পূর্বে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করা এক ছোট্ট খোকা কালক্রমে হয়ে উঠেছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যাঁর সারা জীবনের আত্মত্যাগ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার জন্ম-শতবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপনের লক্ষ্যে আমরা ২০২০-২১ সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করেছি। কিন্তু, এরই মধ্যে বৈরী করোনা মহামারী বিশ্বকে যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। অন্যান্য দেশের মতো আমরাও পূর্ব-ঘোষিত পরিকল্পনা সীমিত পরিসরে চালু রেখে এ মহামারী থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্যে জীবনযুদ্ধে নেমে পরেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছি। এই ক্রান্তিকাল উত্তোরণে ডাক্তার-নার্স-টেকনিশিয়ান নিয়োগ করেছি। দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ২১টি প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছি। ”
গত এক যুগ ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত জনকল্যাণমুখী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতির মানদন্ডে বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে গত অর্থ-বছরের প্রাথমিক প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ৮.২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব ছিল। তাছাড়া, গোটা বিশ্ব যেখানে প্রবৃদ্ধির ঋণাত্মক হার ঠেকাতে ব্যতিব্যস্ত, সেখানে করোনাকালেও আমরা ৫.২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি। স্বাস্থ্যখাতেও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছি, এখন আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ু ৭২.৬ বছর। ৯৭.৫ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিচ্ছি। পদ্মা সেতুর সকল স্প্যান বসানোর ফলে বিশ্বের অন্যতম খর¯্রােতা নদীর দু’প্রান্ত এখন সংযুক্ত। রাজধানীতে মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ-কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিক করেছি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটি ছাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর কর্মসংস্থানের অবাধ সুযোগ সৃষ্টি করেছি। প্রথম ‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’-এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে রূপকল্প-২০২১ অর্জন প্রায় শেষ। মুজিববর্ষে আমরা অঙ্গীকার করেছি কেউ গৃহহীন থাকবে না। শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও পৌঁছে দেব। ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। ২৬ মার্চ ২০২১ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করব।
নতুন বছরে আমরা একটি নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা মহামারী বিশ্ববাসীকে এক কঠিন বার্তা দিয়েছে। যতই উন্নত হোক না কেন, একা কোন দেশ শ্রেষ্ঠত্বের দাবি নিয়ে দাঁড়াতে পারবে না। পারস্পরিক সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমেই যে কোন বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব। আমাদের সকলকে এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি তারুণ্যের শক্তি ও প্রযুক্তি-জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বে দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

আপনার মতামত দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

বরগুনার সওদাগর পাড়া এখন সবজির গ্রাম

বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার সওদাগর পাড়া গ্রামে লবণাক্ত জমিতে সবজি চাষ করে ২২০ জন চাষীর ভাগ্য ফিরেছে। বর্তমানে ওই গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছে...

ট্রাম্পের অভিষেক উপলক্ষে ঢাকার অভিনন্দন

ওয়াশিংটন ডিসিতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করার প্রাক্কালে ঢাকা আজ তাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগ দিতে আজ রাতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডের দাবোসে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে যোগ দিতে চারদিনের সফরে আজ ঢাকা ত্যাগ করবেন।

তিস্তা ব্যারেজ কমান্ড এলাকায় সেচের পানি দেওয়া শুরু 

তিস্তা ব্যারেজ কমান্ড এলাকায় চলতি বোরো মৌসুমে ক্যানেলগুলোতে সেচের পানি দেওয়া শুরু হয়েছে। ফলে কমান্ড এলাকায় কৃষকরা বোরো চাষে মাঠে নেমে পড়েছেন।...

Recent Comments