গ্রামীণ কৃষি ডেস্কঃ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শীঘ্রই ভুয়া অনলাইনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আজ দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে তাদের অনলাইন জার্নাল ‘রিপোর্টার্স ভয়েস’ উদ্বোধন ও ডিআরইউ সদস্য লেখক সম্মাননা ২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা জানান।
ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: শফিকুর রহমান এবং ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী এসময় বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রী বলেন, “২০০৯ সালে হাতেগোনা কয়েকটি অনলাইন ছিল, এখন অনলাইনের সংখ্যা অনেক, তবে সবগুলো অনেক ক্ষেত্রেই সহায়ক নয়। সেজন্য আমরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রম শুরু করেছি। আমাদের পরিকল্পনা আছে এ বছরের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমটি যতদূর সম্ভব সম্পন্ন করা। একইসাথে যে সমস্ত অনলাইন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পরিবর্তে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহৃত হয়, যে সমস্ত অনলাইন গুজবের সাথে যুক্ত, সমাজে অস্থিরতা তৈরি করে, সেগুলোর ব্যাপারে আমরা আগামী বছর থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া শুরু করবো।”
অনলাইন নিউজপোর্টাল রেজিস্ট্রেশনের কার্যক্রমটি এগিয়ে যাওয়ার পর এই আইনগত ব্যবস্থা শুরু হবে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘এটি যেমন সমাজের চাহিদা, একইভাবে সাংবাদিক সমাজেরও চাহিদা। যে অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো সত্যিকার অর্থে সংবাদ পরিবেশনের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা না করে ভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ করে, সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা পৃথিবীর প্রেক্ষাপট। উন্নত দেশগুলোতে এক্ষেত্রে অনেক শৃঙ্খলা স্থাপন করা সম্ভবপর হয়েছে, যেটি এখনো এখানে পুরোপুরি সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে দিতে গিয়ে অনেক সময় ভুল সংবাদ এবং অসত্য তথ্য পরিবেশিত হয়। আবার অনেক সময় দেখা যায়, অনেক বেশি ক্লিক পাওয়ার জন্য দেয়া হেডিং এর সাথে ভেতরের সংবাদের মিল নেই। বিশেষ করে যে অনলাইনগুলোতে কোনো অনুষ্ঠান চলাকালীন সংবাদ পরিবেশনের ক্ষমতা রিপোর্টারকে দেয়া থাকে, সেখানে অনেক অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে দেখা যায়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এটা কমিয়ে আনা সম্ভব। এবিষয়ে পিআইবি’র সাথে যুক্ত হয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে থাকে, যা সত্যিই প্রয়োজনীয়।’
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘এখন দেখা যায় কেউ একজন অনলাইন পোর্টাল খুলে তাকে সাংবাদিকের কার্ড দিয়ে দিলো। তিনি আসলে প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিক নন, সেই কার্ডটির জন্যই সাংবাদিক সেজেছেন। এগুলোকে বন্ধ করার জন্য রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিক বিভিন্ন সাংবাদিকদের যে ফোরামগুলো আছে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিছু কিছু ‘সাংবাদিক নামধারী’র জন্য পুরো সাংবাদিক সমাজের বদনাম হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ কোর্টে অনেক সময় ভুয়া উকিল ধরা পড়ে। আইনজীবী সমিতিই কিন্তু ভুয়া উকিল খুঁজে বের করে। এক্ষেত্রেও সাংবাদিকদের ফোরামগুলো উদ্যোগী হলে সরকার আপনাদের পাশে থাকবে, সহায়তা করবে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিকে অনলাইন জার্নাল শুরুর জন্য অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে মানুষের কাছে সহজে তথ্য পৌঁছানো সম্ভব। দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, সেকারণে এটা করা সম্ভব হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি তখন বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৪০ লক্ষ আর আজকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১১ কোটির বেশি। ২০০৯ সালে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ছিল সাড়ে ৩ থেকে ৪ কোটি মানুষ, এখন ১৭ কোটি মানুষের দেশে সাড়ে ১৫ কোটির কাছাকাছি মোবাইল সিম ব্যবহারকারী। এই ব্যাপক পরিবর্তন জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল, দুরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভবপর হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অথচ ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে আমরা যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান দিয়েছিলাম, তখন অনেকে হাস্যরস করেছে। আর আজ ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে আমরা প্রতিবছর কয়েক মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি।
ডিআরইউ জার্নাল রিপোর্টার্স ভয়েস উদ্বোধনের পর মোরসালিন আহমেদ, জাকির হোসেন, মিজান রহমান, এম মামুন হোসেন, রিয়াজ চৌধুরী, সাজেদা পারভীন সাজু, আমীন আল রশীদ, মোতাহার হোসেন, প্রণব মজুমদার, আমিাংল মোমেনীন মানিক, রকিবুল ইসলাম মুকুল, আবু আলী, মিজান মালিক, মুহমশফিজুর রহমান নাহিদ, মো: শফিউল্লাহ সুমন, তরিকুল ইসলাম মাসুম, আবু হেনা ইমাংল কায়েস, মাইদুর রহমান রুবেল, মাসুম মোল্লা, সায়ীদ আবদুল মালিক, দীপন নন্দী, হক ফারুক আহমেদ, সেলিনা শিউলী, চপল বাশার, আশীষ কুমার দে, জামশেদ নাজির, শামসুজ্জামান শামস, ইন্দ্রজিৎ সরকার, আহমেদ মুশফিকা নাজনীন ও হাবিবুল্লাহ ফাহাদ-এই ৩০ সাংবাদিকের হাতে ডিআরইউ সদস্য লেখক সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে ডিআরইউ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে তিনি ডিআরইউ মটর সাইকেল ছাউনির ফিতা কাটেন।