গ্রামীণ কৃষি ডেস্কঃ কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের জীবিকার মূল উৎস কৃষি।
কৃষিতে সাফল্যজনক অর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্যই কৃষির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
ড. রাজ্জাক আজ শনিবার টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলাস্থ হলরুমে উপজেলার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও দুস্থদের মাঝে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
দেশে খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল।
মন্ত্রী এসময় জানান, দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষি খাত এখনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জিডিপিতে কৃষির অবদান কমে এলেও কৃষির গুরুত্ব কমে নাই। কৃষির উন্নয়নই দেশের অন্যান্য উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে থাকে। যারা মাঠে কাজ করে রোদে, বৃষ্টিতে পুড়ে তাদের রক্ত, ঘামকে সোনালি ফসলে রূপান্তর করে, সেই কৃষক সমাজের অবদান অনেক বেশি। তারা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের একটা ভিত্তি হয়েছে এবং একটা সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের কৃষি-বান্ধব নীতি গ্রহণ, সার, বীজ, সেচসহ কৃষি উপকরণে ভর্তুকি প্রদান এবং ফসলের উন্নতজাত উদ্ভাবন ও চাষের ফলে দেশে কৃষিক্ষেত্রে ও খাদ্য উৎপাদনে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। ফলে, এখন বাংলাদেশে কোন মানুষ অনাহারে থাকে না, করোনাসহ শত দুর্যোগের মাঝেও কেউ না খেয়ে থাকে না।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. রাজ্জাক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়সহ সকল স্তর হতে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে সমূলে দূর করতে কঠোরভাবে চেষ্টা করছেন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধীরা সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসেছিল। তারা সবসময় সাম্প্রদায়িকতাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মদদ দিয়েছে, লালন-পালন করেছে। এখনও এই অশুভ শক্তি সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের জন্য বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা নানাভাবে উসকানি দিয়ে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
মধুপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক আতাউল গনি।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফা জহুরা, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খন্দকার শফি উদ্দিন মনি, মধুপুর পৌরসভার মেয়র মাসুদ পারভেজ, মধুপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশিদ, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খন্দকার শফি উদ্দিন মনি, মধুপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাছির আহমেদ শরীফ, মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, মধুপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার আব্দুল গফুর মন্টু, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার, মধুপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিক হোসেন খান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মধুপুর উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে ২৫৮ জন শিক্ষার্থীকে ১৫শ’ টাকা করে উপবৃত্তি এবং ১৭ জন দুস্থ ব্যাক্তিকে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে জন প্রতি ১৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। – বাসস