এস এম আশরাফুল আলম
আমাদের দেশের হাওর-বিল,মাঠ-প্রান্তরের সুপরিচত ফুলের নাম- চাঁদমালা।বর্ষা মৌসুমে পানিতে ভরা হাওরের শেষ সময়টুকুতে চাঁদমালার সাদা ফুলে ছেয়ে যায় হাওর ও এদেশের অনেক প্রাকৃতিক জলাশয়। চাঁদমালার ফুল শাপলা গড়নের হয়ে থাকে।আকারে অনেক ছোট, কাছে না এলে দূর থেকে বোঝা যায় না। পাতা ও ফুল পানির উপর ভেসে থাকতে দেখা যায়।পানিতে কাণ্ড নিমজ্জিত অবস্হায় থাকে। সকাল বেলার দিকে হাওর-বিলে প্রচুর চাঁদমালা ফোটে। দেখে মনে হবে, কোনো বিশাল সাদা বরফরাশি জেগে আছে পানির মধ্যে। অনেক জায়গাজুড়ে এরা বেড়ে ওঠে হাওর-বিলে।
চাঁদমালা লতানো জাতীয় জলজ উদ্ভিদ, সাধারনত শিকড় গজায় গাঁট থেকে। ভাসমান পাতা প্রায় গোল, ৫-৮ সেমিঃ চওড়া, বোঁটা প্রায় ৪ সেমিঃ, ওপরটা মসৃণ, নিচে প্রকট শিরাজাল থাকে। ফুল ছোট ও সাদা। পাপড়ি সংখ্যা ৫, কিনারা ঝালরের মতো, কেন্দ্র গাঢ়-হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। ফল গোলাকার ধরনের।চাঁদমালার বৈজ্ঞানিক নামঃ Nymphoides hydrophylla.আমাদের দেশের জলাভূমিতে সাধারণত দুই প্রজাতির চাঁদমালা ফুল দেখতে পাওয়া যায়। যার একটির ফুলের পাঁপড়িতে অসংখ্য খাঁজ থাকে এবং অন্যটির পাঁপড়ি মসৃণ হয়ে থাকে। উভয় প্রজাতির ফুলের কেন্দ্র বা পাঁপড়ির গোড়ার রঙ হলুদ। তাছাড়া আরও কয়েকটি নামে পরিচিত চাঁদমালা ফুল- চন্দ্রমালা, চন্দ্রহার,পানচুলি প্রভৃতি। জলাশয়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্য, মাছের খাবার ও ফঁড়িংয়ের আশ্রয়ের জন্য চাঁদমালা উপকারী উদ্ভিদ। আমাদের দেশে চাঁদমালাকে সবজি হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন হাওর অঞ্চলের লোকজন। চাঁদমালার পাতা ঔষধি গুণসম্পন্ন।