গ্রামীণ কৃষি ডেস্কঃ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে এলেই বিএনপির রাজনীতি টিকবে, অন্যথায় বিএনপি নিজেদের আগুনে পুড়ে নি:শেষ হয়ে যাবে ।
তিনি আজ দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ভাসানী আয়োজিত অনুষ্ঠানে সরকারি বাসভবন থেকে অনলাইনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল এবং তাদের নেতারা নানা কথা বলছেন। ২০১৩-১৪-১৫ সালে তারা যেভাবে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর খেলায় মেতেছিল, এখনও যদি আগুন নিয়ে খেলে, তারাই সে আগুনে জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাবে।’
‘বিএনপির অস্তিত্ব জানান দেয়ার জন্য, রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য কি বাস পোড়াতে হবে’ প্রশ্ন রেখে ড. হাছান বলেন, ‘অনেকে যখন প্রশ্ন করছে- বিএনপি আজকে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে কি না, তখন আমি বলবো, বিএনপি দাঁড়িয়ে আছে, তবে পা এবং হাঁটু খুব নড়বড়ে। আমরা দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল চাই। আমরা আশা করবো, বিএনপি হাঁটুকাঁপুনি ছাড়া দাঁড়াতে পারবে এবং তারা এই অপরাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে। তাহলেই বিএনপির রাজনীতি টিকবে, অন্যথায় তারা নিজেদের আগুনেই পুড়ে নি:শেষ হয়ে যাবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বিএনপি করোনাভাইরাসে উদ্বিগ্ন মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে বরং বাসে আগুন দিচ্ছে, অতীতের মতো মানুষ পোড়ানোর নোংরা খেলায় মেতেছে এবং এটি করার পর এমনভাবে অস্বীকার করছে, অবলীলায় মিথ্যা বলছে, যে আমাকে আবারও বলতে হচ্ছে, মিথ্যা বলায় পুরস্কার থাকলে বিএনপিনেতারা প্রথম পুরস্কার পেতেন। এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট, তারা এখন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, অতীতেও ঘটিয়েছে।’
‘আজকে বিএনপি’র বড় বড় নেতাদের অনেকেই মওলানা ভাসানীর অনুসারী ছিলেন, যারা সবাই ক্ষমতার লোভে জিয়াউর রহমানের বিতরণকৃত ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট নিতে মওলানা ভাসানীর আদর্শচ্যুত হয়ে বিএনপিতে যোগদান করেছিলেন’ উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। ‘দলছুট, রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া, আদর্শচ্যুত রাজনীতিবিদরা আসলে কোনো দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেনা, সেটিই আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি’ বলেন ড. হাছান।
এসময় বিএনপি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর হাফিজের ‘ভোটের মাধ্যমে নয়, গণঅভ্যুত্থানে সরকারপতন ঘটাতে হবে’ বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত: বিএনপি তো ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনা। এবং দ্বিতীয়ত: রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে, এই কথা গত প্রায় ১২ বছর ধরে তারা বলে আসছে। তারা আসলে ভোটে যেমন বিশ্বাস করেনা, রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে কখনো যে সরকারের পতন হবেনা, সেটিও তারা বোঝে। আসলে তারা অতীতে যেমন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছিল, এখনও নানা ষড়যন্ত্র আঁটছে, ষড়যন্ত্র নিয়েই ব্যস্ত আছে।’
মওলানা ভাসানীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘তিনি কখনো ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি, ক্ষমতার সাথে আপোষ করেননি। মুসলিম লীগের ড্রইংরুমকেন্দ্রিক রাজনীতিকে জনগণের কাতারে আনার জন্য মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে প্রথমে আওয়ামী মুসলিম লীগ ও পরবর্তীতে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত করতে গঠিত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশে স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সুতরাং এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে জাতীয় নেতা মওলানা ভাসানীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।’
ন্যাপ ভাসানী চেয়ারম্যান এম এ ভাসানীর সভাপতিত্বে সভায় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এডভোকেট নূরুল আমীন রুহুল, মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন মো. গণি মিয়া বাবুল, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. আজগর আলী প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।